নিউ ইয়র্ক শীর্ষ খবর

নিউইয়র্কে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে নিউইয়র্কে উদ্‌যাপিত হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন উত্তর আমেরিকা ইনকের উদ্যোগে গৌরবময় ৫০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন করা হয়।

এ উপলক্ষে গত ১৮ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসের মেজবান রেস্টুরেন্টের পার্টি হলটি যেন হয়ে উঠেছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস। সাবেক শিক্ষক, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনের অনুষ্ঠানটি উৎসবমুখর মিলনমেলায় পরিণত হয়।
প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অতীত স্মৃতি রোমন্থন, কুশল বিনিময়, অনুভূতি প্রকাশ ও উল্লাসমুখর আনন্দঘন পরিবেশে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সকলে উপভোগ করেন। হল রুমটি সজ্জিত করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনার ছবি ও স্লোগান সংবলিত পোস্টারে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাবিনা শারমিন নিহারের পরিচালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি বিষ্ণু গোপ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর শাহনেওয়াজ ডিকেন্স, অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়কারী ও সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সামশুদ্দীন আজাদ এবং অনুষ্ঠানের সদস্যসচিব ও সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ আজিজ নঈমী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরই শুরু হয় অ্যালামনাই পরিবারের সদস্য ও অতিথি শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল কেক কাটা। ১৯ নভেম্বর সকালে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল অনুষ্ঠান ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনের পরপরই নিউইয়র্কে ১৮ নভেম্বর মধ্যরাতে কেক কেটে মূল অনুষ্ঠানের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করা হয়।
স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বিভিন্ন স্মৃতি নিয়ে শিক্ষার্থীরা আবেগে ভেসেছেন। মজেছেন নস্টালজিয়ায়। স্মৃতিচারণে উঠে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, ঝুপড়িতে বসে চা-শিঙারা খাওয়া, মউর দোকান, হলের সামনে আড্ডা, ক্যাফেটেরিয়ায় দুপুরে খাবার জন্য দীর্ঘ লাইন, হলের পানি মিশানো ডাল।
স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জাহাঙ্গীর শাহনেওয়াজ ডিকেন্স। স্মৃতিচারণ করেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক স্বপন দাস ও দিলওয়ার হাসান, সামশুদ্দীন আজাদ, সাবেক ছাত্রনেতা মাহমুদ আহমেদ, চাকসুর সাবেক আপ্যায়ন সম্পাদক মামুন, অধ্যাপক আকতার হোসাইন, চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি কামাল হোসেন, ডা. হাসান শহীদ, ডা. উৎপল চৌধুরী, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল আউয়াল, সহসভাপতি অধ্যাপক নোয়াব মিয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, রাজনীতিবিদ আবু তালেব চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শাহেদ আলী, এ করিম জাহাঙ্গীর, সানাউল্লাহ, কবিতা সেন, মোহাম্মদ মোজাহিদ হোসেইন, মুসফিকুন্নেছা, শাহেদা রহমান, মহিন উদ্দিন, পরেশ সাহা, বাংলাদেশ সোসাইটির নবনির্বাচিত স্কুল ও শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আহসান হাবিব, জসিম চৌধুরী, এস এম ইকবাল ফারুক, সাদিয়া আফরোজ, সৈয়দা পারভিন আকতার, নাজনীন মামুন, নাসির উদ্দিন, আনোয়ারুল করিম, আবুল কালাম আজাদ, জাহিদ হাসান ও ইমতিয়াজ রায়হান প্রমুখ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন অতিথি শিল্পী চন্দন চৌধুরী, কৃষ্ণা তিথি, রুবি রউফ এবং অ্যালামনাই পরিবারের সদস্য ফাহমিদা ইয়াসমিন, হাসান মাহমুদ ও শওকত মাহমুদ। তবলায় সংগত করেন তপন মোদক। লিউনা মুহিতের মনোমুগ্ধকর নৃত্য সবাইকে বিমোহিত করে। মুখরিত জীবনের চলার বাঁকে ক্যাম্পাসের বহুল প্রচলিত জনপ্রিয় এই গানটিতে অংশ নিয়েছেন নিহার, হাসান, বিষ্ণু, এ্যানি, সাদিয়া, শাহেদ, শিল্পী, শিবলী, ডিকেন্স ও ফারহানা। কবিতা আবৃত্তি করেন শিবলী ছাদেক। আরও কবিতা আবৃত্তি করে শিশুশিল্পী ফাসীর কবির কাব্য।
অনুষ্ঠানে নানা কাজে সহযোগিতা করেন অধ্যাপক নোয়াব মিয়া, অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, এস এম ইকবাল, অধ্যাপক গোলাম মোহাম্মদ মুহিত, মুহাম্মদ এয়াকুবউদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, আবুল কাসেম, অধ্যাপক নুরুল আমিন মজুমদার, মোহাম্মদ আবদুস সবুর খান, এন চৌধুরী কাউছার, ক্যাপ্টেন লতিফুর রহমান, ফারুক আহমেদ মিয়াজি, হোছনা চৌধুরী, সামশুন্নাহার শিল্পী, শিলা মুহিত, শিল্পী হাসান ও আয়েশা আকতার।
আগত সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়। মধ্যরাতে অনুষ্ঠান শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের স্মৃতি নিয়ে সকলেই বাড়ি ফেরেন।