নিউ ইয়র্ক

নিউইয়র্কে বগুড়াবাসীর ভুলকাভাত

bogra
বগুড়া সমিতি অব নর্থ আমেরিকার আয়োজনে নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের বেথপেজ স্টেট পার্কে অনুষ্ঠিত হয়েছে বগুড়া জেলাবাসীর ১১তম ভুলকাভাত (বনভোজন)। পার্কের অরণ্যের সবুজ চত্বরে বগুড়াবাসীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছিল বগুড়া জেলাবাসীর ভুলকাভাত। প্রবাসে কঠোর পরিশ্রমের মাঝেও উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বগুড়াবাসীদের ঐক্যের মিলনে এই ভুলকাভাত এক পারিবারিক মিলনমেলায় পরিণত হয় সেদিন। গতবারের মতো এবারেও বগুড়া সমিতি অব নর্থ আমেরিকার আয়োজনে এই ভুলকাভাত অনুষ্ঠিত হয়। সকালের সোনালি সূর্যের আলোয় বগুড়াবাসী জ্যাকসন হাইটস থেকে বাসে চড়ে যাত্রা শুরু করেন। গন্তব্যের উদ্দেশে সকাল সাড়ে ৮টায় জ্যাকসন হাইটস থেকে বাস ছাড়া হয়।

ভুলকাভাতে সকালের নাশতা তৈরি ও বিতরণ করা হয় পার্কে। বগুড়ার গৃহিণীরা রান্না করে নাশতা বিতরণ করেন। যার সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন রাশিদা খাতুন (হিরা), অ্যাডভোকেট সুরাইয়া মনিরা, মনিরা হক, সুফিনাজ স্বপ্না, মুন ও হুমায়রাসহ অনেকে। নিঃসন্দেহে এটা ছিল সুস্বাদু এবং সকলেই নাশতার প্রশংসা করেন।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি মইন চৌধুরী, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা নাসির খান (পল), প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাসানুজ্জামান হাসান, সভাপতি ডা. আবদুল লতিফ, সাধারণ সম্পাদক রাকিবুজ্জামান খান (তনু) ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাফফর হোসেনসহ কমিউনিটির অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন ভুলকাভাতের আহ্বায়ক আতাউর রহমান (লিটন), সদস্যসচিব সুরাইয়া মনিরা, সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ এ কাদির, সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন (রতন), আলতাব হোসেন (সবুজ), রেজাউদ্দৌলা অ্যাপোলো, মোহাম্মদ এন মণ্ডল (ফানসু) ও মাসুদুল হক (রুবেল) প্রমুখ। বক্তারা একটি সুন্দর সফল ও উপভোগ্য ভুলকাভাত আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।
এবারের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের প্রচেষ্টায় ভুলকাভাত এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। এ ছাড়া এ উপলক্ষে একটি ম্যাগাজিনও প্রকাশ করা হয়।
সকালের নাশতার পর নতুন প্রজন্ম ও বড়দের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন ধরনের খেলা। সেখানে ছিল ছোট্টদের দৌড়, পিলো থ্রো, বড়দের মার্বেল দৌড়, পুরুষদের দৌড় ও ফুটবলসহ নানান ধরনের খেলাধুলা। সাদা ও হলুদ দলের মধ্যে প্রচণ্ড প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফুটবল খেলা গোলশূন্য ড্র হয়।
বিকেলে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে সংগীত পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সমিতির উপদেষ্টা মোস্তফা আলমগীর।
র‍্যাফেল ড্রতে প্রথম পুরস্কার ছিল ৫০ ইঞ্চি টিভি। যার স্পনসর ছিলেন ওয়াসি চৌধুরী। র‍্যাফেল ড্রতে দ্বিতীয় পুরস্কারের স্পনসর ছিলেন অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী। তিনি দেন ল্যাপটপ। এ ছাড়া ছিল নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের ল্যাপটপসহ আরও অনেক পুরস্কার।
ভুলকাভাতকে সফল করার নেপথ্যে যাঁরা কারিগর ছিলেন তাঁরা হলেন; আয়োজক আগা-ই-জলিল (তুহিন), মাসুদুল হক (রুবেল), মোহাম্মদ এন মণ্ডল (ফানসু), কৃষিবিদ আবদুল কাদের, মোস্তফা আলমগীর, সুফিনাজ স্বপ্না, আফরোজা বেগম (শেলি), শিল্পী বেগম, রোকেয়া বেগম, আতাউর রহমান (লিটন), আশরাফ হোসেন (রতন), সুরাইয়া মুনিরা, রাসেদ আল হেলাল (রতন), সেলিনা আক্তার (চন্দনা), মনিরা হক, ময়না আক্তার, হিরা, রেজাউদ্দৌলা অ্যাপোলো, বিধান চন্দ্র পাল, রাশিদা খানম (হিরা), শারমিন আক্তার (মুন), হাসিবুল হাসান (ইউসুফ), ওবায়দুল হক, মাহবুব ও হাসানসহ অনেকে।
সমিতির ক্রীড়া সম্পাদক রাশেদ আল হেলালকে ভুলকাভাতে বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কৃত করা হয়।
র‍্যাফেল ড্র এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ শেষে ভুলকাভাতের আহ্বায়ক আতাউর রহমান সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, এই ভুলকাভাত গত ৪ সেপ্টেম্বর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাসের কারণে তা ২৫ সেপ্টেম্বর রোববার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এ জন্য আয়োজকেরা সকলের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।