প্রবাসের রাজনীতি

হিলারি যাদের টানতে পারেননি

hilari
লাতিন ও আফ্রিকান বংশোদ্ভূত বা কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিনদের নিয়ে এবং নারীদের নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্য সত্ত্বেও ওই ভোটারদের পুরোপুরি টানতে পারেননি হিলারি ক্লিনটন।

ভোট শেষে দেখা যায়, প্রায় ৮৮ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ হিলারিকে সমর্থন দিয়েছেন। সেখানে ‘সব যুগে সবচেয়ে কদাকার এই কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়’—এমন মন্তব্য করেও ট্রাম্প তাদের ৮ শতাংশের সমর্থন পেয়েছেন। এই পার্থক্যটা ২০১২ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট ওবামা ও রিপাবলিকান রমনির মধ্যে যে পার্থক্য ছিল, তার মতো হয়নি। ওই নির্বাচনে ওবামা কৃষ্ণাঙ্গদের ৯৩ শতাংশ ও রমনি ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন।

এ বছর মোট প্রদত্ত ভোটের প্রায় ১২ শতাংশ ছিল আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মার্কিনদের। চার বছর আগে তাদের প্রদেয় ভোটের সংখ্যা এক শতাংশ বেশি ছিল। অর্থাৎ ওই ভোটারদের বুথে টানতে ব্যর্থ হয়েছেন হিলারি।

লাতিনদের কাছ থেকেও পুরোপুরি সমর্থন আদায় করতে পারেননি হিলারি। ট্রাম্প লাতিনদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এ বক্তব্যের পরও রিপাবলিকান এই প্রার্থী লাতিনদের ২৯ শতাংশের ভোট পেয়েছেন। আর হিলারি পেয়েছেন ৬৫ শতাংশ ভোট।

শুধু তাই নয়, হিলারি তরুণ ভোটারদের কাছে পৌঁছাতেও ব্যর্থ হয়েছেন। ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী ভোটারদের মধ্যে ৫৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন হিলারি। ট্রাম্প পেয়েছেন ৩৭ শতাংশ। অথচ গত নির্বাচনে ওবামা তরুণ ভোটারদের ৬০ শতাংশের ভোট পেয়েছিলেন।

শ্বেতাঙ্গদের কাছ থেকে ওবামা যতটা ভোট নিতে পেরেছিলেন, হিলারি ততটাও পারেননি। ওবামা নিজে কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ার পরও পেয়েছিলেন ৩৯ শতাংশ ভোট। আর হিলারি এবার পেলেন ৩৭ শতাংশ ভোট। এখানে ট্রাম্প পেয়েছেন ৫৮ শতাংশ।

এশিয়ান ভোটারেরাও ওবামাকে যতটা সমর্থন দিয়েছিলেন, হিলারিকে ততটা দেননি। এবার যাঁরা ভোট দিয়েছেন তাদের মধ্যে ৪ শতাংশ এশিয়ান। তাঁদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ ভোটার হিলারিকে ভোট দিয়েছেন। অথচ ওবামাকে দিয়েছিলেন ৭৩ শতাংশ।

নারীদের নিয়ে নানা বিরূপ মন্তব্যের কারণ পুরো নির্বাচনী প্রচারে বিতর্কিত ছিলেন ট্রাম্প। এর কারণে তাঁর দলের অনেকেই তাঁর ওপর থেকে সমর্থন সরিয়ে নেন। তাই ধরেই নেওয়া হয়েছিল নারীদের ভোটগুলো অন্তত হিলারির পক্ষে যাবে। কিন্তু হায়! এখানেও হিলারি একার আধিপত্য দেখাতে পারেননি। হিলারি নারী ভোট পেয়েছেন ৫৪ শতাংশ আর ট্রাম্প ৪২ শতাংশ। অথচ ৭০ শতাংশ ভোটার বলেছিলেন, নারীদের নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য তাঁকে ভোগাবে। ২০১২ সালে নারী ভোটারদের ৫৫ শতাংশই ওবামাকে ভোট দিয়েছিল।