ব্যবসা-বাণিজ্য

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প নিয়ে হার্ভার্ডে সম্মেলন

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ২৪ সেপ্টেম্বর শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। হার্ভার্ড ল স্কুলের ওয়ালস হলে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির লেবার অ্যান্ড ওয়ার্ক লাইফ প্রোগ্রাম এবং বোস্টন ভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের (আইএসডিআই) যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ, কানাডা, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, পোশাক প্রস্তুতকারী, রপ্তানিকারক, ব্র্যান্ড ও বিক্রেতাকারী, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও দাতা সংস্থা এবং বিভিন্ন শ্রমিক অধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

দিনব্যাপী সম্মেলনে যে চারটি সেশনে (১) কমপ্লায়েন্স মেনে পোশাক রপ্তানি, পোশাকের ন্যায্য দাম নিশ্চিতকরণ ও তাতে ক্রেতা-বিক্রেতার যৌথ দায় নিশ্চিতকরণ, (২) বাণিজ্য নীতি, শ্রমিকদের অধিকার ও কর্মপরিবেশ: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ, (৩) পরিবেশগত টেকসই উন্নয়ন কৌশলের অপরিহার্যতা ও (৪) বাংলাদেশের পোশাক শিল্প: ২০২১ সালের মধ্যে পাঁচ হাজার কোটি ডলার অর্জনের রূপকল্প নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সম্মেলনে মূল বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ সরকার পোশাক শ্রমিকদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং এসব পদক্ষেপকে আরও বলিষ্ঠ করতে পাশ্চাত্যের আমদানিকারক ও উন্নয়ন সহযোগীদের ভূমিকা রয়েছে। তিনি তাঁর বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ সকল পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের আহ্বান জানান।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা এমি ম্যাকগেন বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কিছু অগ্রগতি হলেও বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে আরও কাজ করতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ ইয়েভজেনিয়া শেভচেঙ্কো বলেন, উচ্চমূল্যের কারণে চীনের পোশাক রপ্তানি কমলে বাংলাদেশের জন্য তৈরি পোশাক খাতে বিশাল সুযোগ তৈরি হবে এবং পণ্যের দাম, মান, সময় ও কারখানার কর্মপরিবেশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ এই সুযোগ নিতে পারে।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী পোশাক প্রস্তুতকারী, রপ্তানিকারক, আমদানিকারক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা একমত হন, বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতে ব্যাপক সংস্কার হয়েছে। তবে এ খাতের শ্রমিকদের নিরাপত্তা মান উন্নয়নে সরকার ও মালিকপক্ষের বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে পোশাকের ন্যায্য দাম নির্ধারণ জরুরি। সস্তায় পোশাক কেনার চিন্তা করে শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করার দাবি করা যায় না এবং শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতে হলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ন্যায্য মূল্য দিতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেন।
সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন মশিউর রহমানআন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের আয়োজনে সহায়তা করেছে বিজিএমইএ ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক এবং সমন্বয় করেছেন আইএসডিআই-এর নির্বাহী পরিচালক ও হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের কর্মকর্তা ইকবাল ইউসুফ।