ক্যানসাস শীর্ষ খবর

প্রবাসেও দেশীয় আমেজে বিয়ে!

প্রবাসেও দেশীয় আমেজে বিয়ে। যুগল দুজনই বাংলাদেশী। সম্পূর্ণ বাঙালী সংস্কৃতি ধারণ করে নেচে-গেয়ে বর-কনেকে বরণ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস রাজ্যের উচিটায় দুদিনব্যাপী (১৭-১৮ মাচ) জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে হয়ে গেল বাংলাদেশের নেত্রকোনা হোসেনপুর এলাকার ছেলে মাহবুবুল ইসলাম রিগান (বর) এবং চট্টগ্রামের পটিয়ার কচুয়াই গ্রামের মেয়ে নিগাত সুলতানা লিনার (কনে) বিয়ে।

বিয়ে মানে আনন্দ-উল্লাসে নেচে-গেয়ে মেতে উঠা, দেশের মাটি-মানুষ পরিবার-পরিজন ছেড়ে দূরে-অনেক দূরে হয়তো কারো বার্থ-ডে পার্টি, বিয়ে, ঈদ-পূজা-পার্বণে সবার পথযেন এক পথে মিশে যাওয়া। ঠিক তেমনি একটি মুহুর্তের স্বাদ পেতে রিগান-লিনার বিয়েতে ক্যানসাস রাজ্য ছাড়াও অ্যারিজোনা, আরাকানসাস, নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া , লাস- শিকাগো সহ বিভিন্ন স্টেট ও সিটি থেকে ছুটে আসেন অনেকে। এখন আমেরিকা জুড়ে চলছে বসন্তের ছুটি। স্কুল-কলেজ এক সপ্তাহের ছুটির ফাঁদে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে স্কুল ছুটি মানে ছাত্রদের জন্য মহাযন্ত্রণাদায়ক (বোরিং) দিন। তাই যে যার মত করে বেরিয়ে পড়েন । সেই চান্সটি নিতে ভোলেননি ডা.সাদিকুল হক পলাস-তাজিন আপা, ড.খাইরুল কবির ভুইয়া (কবির), মোহাম্মদ শাহজাহান কবির ভুইয়া (টিপু), নাজমুল ইসলাম সোহেল, জাফর ও শান্ত ।

১৭ মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যায় কানসাসের কিচআই সিটি হলে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‌”মধু কই-কই বিষ”,”উড়ি উড়ি যায় দিলকি পতজ্ঞ দেখে, মেরা আসিক চল্লা-বাল্লা সহ বাংলা-হিন্দি গানের তালে-তালে মঞ্চ মাতালেন রুমানা, আরফা, শ্রাবণী, শমী, নাদিয়া, শারমিন ও তানিয়া। বাংলা-ইন্ডিয়ান গানের তালে-তালে যৌথ নৃত্যের ফাঁকে তাজিনের রবীন্দ্র-নজরুল সঙ্গীত গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যায়। এদিকে শত-শত বাংলাদেশীর উপস্থিতিতে ১৮ মার্চ উচিটা শহরের মসজিদ অডিটোরিয়ামে নানা পদের মুখরোচক খাবার পরিবেশনের মধ্য দিয়ে বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান হয়েছে।
রাত আটটায় বণিল আলোয় ঘেরা মঞ্চে নববধু-বরকে শুভেচ্ছা জানাতে মঞ্চে উঠে আসন উচিটার রিয়েলেটর ব্যবসায়ী মাপেরা করিম, প্রকৌশলী রূপন কান্তি দেব, ড.খাইরুল কবির ভুইয়্যা, মোহাম্মদ ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠান দুটি উপস্থাপনা করেন – সাইয়দা নাবিলা। গায়ে হলুদ ও বিয়ে মঞ্চের অঙ্গসজ্জায় ছিলেন মহিউদ্দিন প্রিন্স। এর আগে ১০ মার্চ শুক্রবার দিনটি ছিল রিগান-লিনার জীবনের এক স্মরণীয় দিন। মুসলিম রীতি অনুযায়ী তাদের আকদ সম্পন্ন করা হয়। যেহেতু দুজনই যুক্তরাষ্ট্রে উচিটায় বসবাস করেন। তাই বিয়ের ক্ষেত্রে যে বা যারা যে দেশে বসবাস করেন সে দেশের আইন (ল অব দি ল্যান্ড) অনুসরণ অবশ্য কর্তব্য। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ২ মার্চ আদালতে বিচারকের সামনে নববধু-বর দুজনই বিয়ের শপথ (উডিং চিরোমনি ) নিয়েছিলেন। মজার ব্যাপার হলো, যুক্তরাষ্ট্রের আদালত থেকে শপথের পরই বিয়ের সাটিফিকেট দিয়ে দেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে আদালতের সাটিফিকেট হলো একজন নরনারীর বিবাহ বন্ধন। বলা হয়ে থাকে – মানুষের বিয়ের কোন সুনিদিষ্ট সময় নেই, যখন বিয়ে করে ফেলে তখন থেকে বৃদ্ধাবস্থা শুরু হয়ে যায়। তবুও থেমে নেই নর-নারী বিবাহ বন্ধন। অনাদিকাল থেকে প্রকৃতির অপার নিয়মে চলছে বিবাহ। কবির ভাষায়- অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর।

ছবি: এমরান হোসাইন