আমেরিকা-বাংলাদেশ সম্পর্ক

আমেরিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা: জাতিসংঘের প্ল্যানারি বৈঠকে ভাষণ

অভিবাসী ও শরণার্থীদের অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, অভিবাসন বিষয়টি সার্বিকভাবে মোকাবিলায় পারস্পরিক দায়িত্বশীলতার ওপর ভিত্তি করে বিশ্বকে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে।

গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে উদ্বাস্তু ও অভিবাসন-সংক্রান্ত সাধারণ পরিষদের উচ্চপর্যায়ের প্ল্যানারি বৈঠকে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এদিনই মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি শুরু হয়।

সাধারণ পরিষদের ওই বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে অভিবাসীদের অধিকার সুরক্ষা করতে হবে এবং বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতি, অভিবাসী ও শরণার্থীদের অধিকার সংরক্ষণ সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। শরণার্থী ও অভিবাসীদের নিয়ে প্রথমবারের মতো এই বৈঠক আহ্বান করায় শেখ হাসিনা জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনকে ধন্যবাদ জানান।

এর আগে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি। এ ছাড়া কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া জ্যানেট শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিতে পাঁচ দিনের সফরে এর আগে নিউইয়র্কে পৌঁছান শেখ হাসিনা। রোববার স্থানীয় সময় বেলা তিনটায় কানাডার মন্ট্রিল থেকে নিউইয়র্কের লা গার্ডিয়া বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন।

বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় ম্যানহাটনের ওলাল্ডরফ এস্টোরিয়া হোটেলে। নিউইয়র্কে অবস্থানকালে তিনি এ হোটেলেই থাকবেন।

আজ মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনের সাধারণ আলোচনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। কাল বুধবার বিকেলে জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে তিনি অধিবেশনের সাধারণ আলোচনায় বক্তব্য দেবেন। তিনি ‘টেকসই উন্নয়নবিষয়ক অ্যাজেন্ডা-২০৩০’ বাস্তবায়ন ও অভিবাসীদের মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা অর্জনের বিষয়ে রাউন্ড টেবিল ৫-এ যৌথভাবে সভাপতিত্ব করবেন। পরে হোটেল ম্যারিয়ট ইস্ট সাইডে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে আয়োজিত কাউন্টার টেররিজমের ওপর এশিয়ান লিডারস ফোরামের বৈঠকে যোগ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তরের কনফারেন্স রুম-২-এ সাউথ সাউথ-বিষয়ক জাতিসংঘ কার্যালয়ে বাংলাদেশ আয়োজিত পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারিতে স্কেলিং আপ ইনোভেশনে সাউথ সাউথ অ্যান্ড ট্রায়াঙ্গুলার কো-অপারেশন বিষয়ে এক বৈঠকে যোগ দেবেন। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আয়োজিত উদ্বাস্তু-বিষয়ক একটি বৈঠকেও যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ সময় তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বারাক ওবামা আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজ ও সংবর্ধনায় অংশ নেবেন।

২১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এবং ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। একই দিন ভার্জিনিয়ার উদ্দেশে নিউইয়র্ক ছাড়বেন এবং ২৫ সেপ্টেম্বর দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন। ২৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা।

ছবি: ফোকাস বাংলা